স্বদেশ ডেস্ক:
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের আদর্শ গ্রামে অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে এক পল্লী চিকিৎসককে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও পরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুরে নোয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোল্লাগ্রামের আবদুল হোসেন মেকারের ছেলে জিয়া বাহিনী প্রকাশ জিহাদ (৩০), আদর্শ গ্রামের খবির উদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন (৩০), একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে আবু তাহের (২৭), আবুল কালামের ছেলে নবীর উদ্দিন (৩২) ও মিয়াজী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০)।
জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক গৃহবধূ (৩২) জনতা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের বাড়ির পাশ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় ফারুক ও তার সহযোগীরা ওই গৃহবধূর দিকে টর্চলাইট মারলে সে দৌঁড়ে ওই চিকিৎসকের মুরগীর খামারের সামনের একটি কক্ষে ঢুকে যায়। তখন চিকিৎসক ওই কক্ষের ভেতরে ছিলেন। এমতাবস্থায় ফারুক তার লোকজন নিয়ে কক্ষটির বাহিরে তালা লাগিয়ে শোরচিৎকার করে আরও লোকজন জড়ো করেন। পরে কক্ষের ভেতরে থাকা ওই চিকিৎসক জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ফারুক, তার লোকজন ও স্থানীয়রা নারীসহ তাকে বাহিরে এনে অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে মারধর করে একটি সুপারি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, এলাকার কিছু উৎশৃঙ্খল বখাটে যুবক অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে পল্লী চিকিৎসক ও একজন গৃহবধূকে মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
পুরুষ নির্যাতনের ঘটনাটি তারা মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি পুলিশের নজরে আসলে গতকাল রোববার তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনায় নির্যাতনের শিকার পল্লী চিকিৎসক বাদী ১১ জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলার ভিত্তিতে গতকাল রাতেই অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ তাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ এনে গত ৫ জানুয়ারি জিহাদ, ফারুক, এনায়েত, ভুট্ট মাঝি ও ফারুক হোসেনকে আসামি করে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছেন হাতিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম ফারুক।
উল্লেখ্য, এর আগে জেলার বেগমগঞ্জে অপর এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সে ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়।